বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
আওয়ামীলীগের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল জন্মদিনে অফিসের কর্মচারী ও প্রিয়জনদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সাব-রেজিস্ট্রার জাহিদ হাসান ডাঃ মাহবুবুর রহমান লিটন বিএনপি’র মনোনয়ন পাওয়ায় ত্রিশালের আসাদ সরকারের অভিনন্দন মোতাহার হোসেন তালুকদার বিএনপি’র মনোনয়ন পাওয়ায় এডভোকেট নজরুল ইসলামের অভিনন্দন চূড়খাই বাজার  নাজিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক ও মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ‘আমীর’ নির্বাচিত হয়েছেন ডা. শফিকুর রহমান চূড়খাই বাজার এলাকার কামাল হোসেন ড্রাইভার মৃত্যু বরণ করেছেন মিথ্যা অপপ্রচার ও মানহানির প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের মাজলুম ইমাম তথ্য প্রমানের তোয়াক্কা না করেই সাংবাদিক কামালের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা নিলো ময়মনসিংহের ওসি শিবিরুল ইসলাম খুতবায় অনলাইন জুয়া,সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে আলোচনা করায় ময়মনসিংহের এক ইমামকে মসজিদ হতে অব্যাহতি
নোটিশ :
Wellcome to our website...

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি ২৪ বছর পর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

Reporter Name / ২২৬ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৪ অপরাহ্ন

আবুল কালাম চট্টগ্রাম//বন্ধুর গায়ে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেন মো. কামাল হোসেন ওরফে বালু কামাল কে। সে থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য পালিয়ে ছিলেন দীর্ঘ ২৪ বছর। অবশেষে শেষ রক্ষা হলো না বালুর ধরা পড়লো র‌্যাবের হাতে।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন বালু কামাল। সে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্থি থনাধীন মেহের স্টেশন রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।মো. কামাল হোসেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার কাউনিয়া এলাকার রসুল করিমের ছেলে।

শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে র‌্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে ব্রিফ করেন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।এ সময় তিনি বলেন, ভিকটিম হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া কোরআনের হাফেজ ছিলেন। তিনি পড়ালেখার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হতে চেয়েছিলেন। ঘটনার আগের দিন দোকান মালিকের অবর্তমানে জাকারিয়া এবং কামাল দোকান খুলে কিছুক্ষণ কাজ করার পর উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে কামাল দোকান থেকে বের হয়ে যায়। ১৯৯৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর হরতালের দিন দোকান বন্ধ ছিল। এদিন আসামি কামাল জাকারিয়াকে জরুরি কথা আছে বলে দোকানে আসতে বলে। জাকারিয়া দোকানে আসার পর কামাল সকাল ৯টার দিকে মগে করে এসিড নিয়ে এসে জাকারিয়াকে বলে তোর জন্য চা এনেছি, চা খা। কিন্তু জাকারিয়া চা খেতে অস্বীকার করে। এতে কামাল ক্ষিপ্ত হয়ে মগভর্তি এসিড জাকারিয়ার মুখে নিক্ষেপ করে। এতে জাকারিয়ার চোখ, মুখ, বুক, হাত ঝলসে যায়। এসিড নিক্ষেপের পর জাকারিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করতে কামাল দিয়াশলাই দিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং কয়েকটি লাথি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ আরও জানান, গুরুতর আহত জাকারিয়ার চিৎকারের আশেপাশের লোকজন এসে প্রায় মৃত অবস্থায় তাকে দেখতে পেয়ে ডবলমুরিং থানায় সংবাদ দেয়। ডবলমুরিং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে জাকারিয়াকে মৃত মনে করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ডিউটিরত প্রহরী হঠাৎ লক্ষ্য করেন, জাকারিয়ার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। পরবর্তীতে ডবলমুরিং থানা পুলিশ গুরুতর আহত জাকারিয়াকে পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যায়। টানা চারদিন সেখানে হাফেজ জাকারিয়াকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। চারদিন পর তার জ্ঞান ফিরে। কিন্তু চোখ ও শরীর এসিডে ঝলসানোর ভয়াবহতা দেখে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে হাফেজ জাকারিয়া সর্বপ্রথম আয়নায় নিজের বিভৎস চেহারা দেখে অজ্ঞান হয়ে যান এবং ৩০ দিন কোমায় ছিলেন। পরবর্তীতে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসিডে জাকারিয়ার এক চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর মোটামুটি সুস্থ হওয়ার পর তিনি সৌদি আরব চলে যান।

এ ঘটনায় তার বাবা মোহাম্মদ ইউনুস মিয়া বাদি হয়ে পরদিন ১৯৯৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর হতে থানা পুলিশ পলাতক আসামি কামালকে গ্রেফতারের জন্য অনেকবার অভিযান পরিচালনা করলেও কামালকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। গত ২৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত আসামি মো. কামালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন।

আসামি কামাল জানিয়েছে, কিছুদিন পলাতক থাকার পর একসময় নিজ এলাকা চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ চলে আসে। পরবর্তীতে সে এলাকায় বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। সেখানে ১৯৯৮ হতে ২০০১ সাল পর্যন্ত স্টুডিওর কর্মচারী হিসেবে ছবি উঠানো, বিয়ে বাড়ির প্যাকেজিং প্রোগ্রাম এর কাজ করতো। ২০০১ সাল হতে ২০০৩ সাল পর্যন্ত সে নিজ ও অন্য এলাকায় গোপনে কৃষিকাজ করেছে।

২০০৩ হতে ২০০৭ সাল পর্যন্ত লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত ডাকাতির মামলায় কারাগারে ছিল। ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়ার পর সে ঢাকার যাত্রাবাড়ির কাঁচামালের আড়তে সবজির ব্যবসা শুরু করে। ২০১০-২০১১ সালে সে পুনরায় ডাকাতির প্রস্তুতির দায়েরকৃত মামলায় কারাবাস করে। ২০১১-২০১৩ সালে মুক্তি পেয়ে বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে কৃষিকাজ করছিল। ২০১৩ সালে এলাকা ছেড়ে শাহারাস্থিতে এসে জমি কিনে বালুর ব্যবসা শুরু করে।

আসামির বিরুদ্ধে লক্ষীপুর জেলার রায়গঞ্জ থানায় ১টি এবং চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানায় ৬টি চুরি, ডাকাতি, নাশকতা এবং মাদক সংক্রান্ত মামলা এবং চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় ১টি এসিড নিক্ষেপ সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যা ব কর্মকর্তা।

জানা গেছে, হাফেজ মো. জাকারিয়া বর্তমানে সৌদি আরবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি বিবাহিত এবং তার ২ সন্তান রয়েছে। এসিডে ঝলসে যাওয়ার পর থেকে এখনও তিনি অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর