ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ১২ নং ভাবখালী ইউনিয়নের উনাইর পাড় খলিফাবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুহাম্মাদ রফিক আল ইসলাম-কে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার মাগরিবের নামাজের পর অন্যায়ভাবে বিদায় দিয়েছে মসজিদ কমিটি।
ইমাম রফিক আল ইসলাম বহুদিন ধরে এ মসজিদে দ্বীনের খেদমত করে আসছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৯৬% মুসল্লী এখনও তাঁকেই তাদের ইমাম হিসেবে চান।
কিন্তু সম্প্রতি জুমার খুতবায় তিনি সমাজে বেড়ে চলা অনলাইন জুয়া খেলা, একাউন্ট খোলা, সুদ ও ঘুষের ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করলে মসজিদ কমিটির সভাপতি, ক্যাশিয়ার ও সেক্রেটারি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। অভিযোগ রয়েছে, সভাপতি নিজেই অনলাইনে জুয়ার সঙ্গে জড়িত এবং একাধিকবার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় ক্যাশিয়ার ও সেক্রেটারি সহ পুরো কমিটি ইমামকে বিদায় দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে।
ফলস্বরূপ, কোনো বৈধ কারণ ছাড়াই তাঁকে ২৮ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই জোরপূর্বক বিদায় দেওয়া হয়।
স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন, হাসপাতালে নবজাতকসহ সংকটের মুহূর্তে মসজিদ হতে অব্যাহতি
ঘটনার ঠিক পরদিন, ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১:৩০ মিনিটে ইমাম রফিকের স্ত্রী একটি সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন। বর্তমানে স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং নবজাতকসহ চিকিৎসাধীন।
এ অবস্থায় হঠাৎ চাকরিচ্যুত হওয়ায় তিনি পরিবারসহ মানবেতর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন।
তিনি বলেন—“আমার কোনো দোষ নেই। আমি শুধু কুরআন ও হাদিসের আলোকে সত্য কথা বলেছি। অথচ আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মসজিদ হতে বিদায় দেওয়া হলো। স্ত্রীর সিজারের সময়, হাসপাতালে নবজাতক বাচ্চা নিয়ে আমার জীবনে এই দুঃসময়ে এমন অন্যায় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া চরম কষ্টদায়ক।”
আলেম সমাজ ও জাতির প্রতি আবেদন অন্যায়ভাবে বিদায় পাওয়া এই ইমাম দেশের সকল আলেম-ওলামা, ইসলামপন্থী সাংবাদিক, মিডিয়া এবং সাধারণ মুসলমানদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
“আপনারা আমার পাশে দাঁড়ান, জালিম কমিটির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। আমি শানে সাহাবা জাতীয় খতিব কাউন্সিল বাংলাদেশ-এর কাছে আবেদন করছি, যেন তারা আমাকে সহযোগিতা করেন এবং আমি দ্বীনের খেদমত চালিয়ে যেতে পারি।”তিনি আরও বলেন—আমার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো মুসল্লীদের ঈমানি শক্তি বাড়ানো এবং সমাজকে সুদ, ঘুষ ও জুয়ার মতো মারাত্মক গুনাহ থেকে দূরে রাখা।”
সাধারণ মুসল্লীদের ক্ষোভ মুসল্লীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দাবি করছেন—“আমরা আমাদের ইমামকে চাই। উনিই আমাদের দ্বীনের সঠিক পথ দেখিয়েছেন। সভাপতি, ক্যাশিয়ার, সেক্রেটারি মিলে জোরপূর্বক তাঁকে বিদায় দিয়েছে। আমাদের অজান্তে গোপনে কমিটি আমাদের ইমামকে বিদায় দিয়েছে, এতে আমরা ব্যথিত ও রোষান্বিত।”